বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩

সে আমায় ভালোবাসতো খুব

রাত জাগার অভ্যাস তখনো হয় নি
বৃষ্টি ভালোবাসতাম বলে
কেউ একজন আমার জন্য সারা রাত জেগে থাকতো
বৃষ্টি দেখতো, দক্ষিণের জানালা খুলে ...

সে আমায় ভালোবাসতো খুব
পরদিন, তার চশমার ঝাপসা গ্লাস দুটোতে চোখ রেখেও আমি বুঝিনি
তার জানালার ভেজা পর্দার গন্ধ শুকেও আমি বুঝিনি...
সে আমায় ভালোবাসতো খুব । 

সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৩

অণুকবিতা ( আহা! )

মন খারাপের দিনগুলোতে এভাবেই তোমায় পাশে চাই
শাড়ি পড়ে এসেছিলে তুমি
রঙটা আমার জানা নাই । 

অণুকবিতা ( চুপ ! )

চুপ করো বোকা মেয়ে
লাভ নেই বৃথা কাব্যের দিনে
অকারণ কথা বাড়িয়ে ।

তারচেয়ে বরং নাকে নাক ঘষে অট্টহাসি দেই
মূলতবি হোক বিদ্রোহ
ভালোবাসা আজ ছড়াবেই !

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যদি ভূত এফ এম শুনতেন

তিন বছর আগে সুমন তার অর্থহীন গান হটাৎ থামিয়ে বলেছিলো
সামনের মাসে 'ভৌতিস্ট'  অন এয়ার হবে ।
তারপর ভূত এফ এম এর কতো এপিসোড এসে চলে গেলো
কিন্তু সেই ভৌতিষ্ট আর এলো না
তিন বছর অপেক্ষায় আছি ।

তিন মিনিটের ট্রেইলার দেখিয়ে সাকিব বলেছিলো
অপেক্ষা করুণ শ্রোতারা
আমরা আপনাদের খুলনায় অভিশপ্ত বাড়িতে ভূত দেখাতে নিয়ে যাবো
সেখানে শেওড়া গাছের মাথায় মামদো ভূত খেলা করে
পেত্নি এসে চিমটি কাটে ।

সাকিব , আমি আর কত অপেক্ষা করবো
আমার ফুটবল তোমার ভুঁড়ির সমান হলে তারপর তুমি আমায় ভৌতিষ্ট দেখাবে ?

অণুকবিতা ( জ্যোৎস্না দেখি না )

কতরাত জেগে কাটিয়েছি
ভালো একটা স্বপ্ন দেখবো বলে
কল্পনায় তোমায় নিয়ে
জোৎস্না দেখার ছলে । 

অণুকবিতা ( তুমি চেয়েছিলে তাই)

তুমি চেয়েছিলে বলে
বর্ষার আমন্ত্রণে...

আকাশ দিলো পাড়ি
হবু শ্বশুর বাড়ি
আমার অজান্তে । 

অণুকবিতা ( টাইমলাইনে ভালোবাসা )

রাগ বেঁচে থাক ক্ষনে
দুপুর বেলার ঘুমে ।

অতীতের পথে হেঁটে
স্মৃতির সাক্ষী হয়ে
প্রেমিকাদের টাইমলাইনে ।

পারমিতা ২

পারমিতা,
আমি বুঝে গেছি সবচেয়ে কঠিন কাজটি করতে গিয়ে
ভুলে যাওয়াটা আনন্দের
বাস্তবিক সকল কিছুর ঊর্দ্ধে গিয়ে
সবচেয়ে বেশী ভালো কাউকে বেসে ফেলাটা দুঃখের ।

জেনে গেছি, তোমার অগভীর অদ্ভুত দুই চোখ,
নখের নীল রঙই হবে আমার মৃত্যুর কারণ
শয্যাপাশে ধূপকাঠি জ্বেলে পারমিতা তুমিও একদিন জানবে
হয়তো তুমিও একদিন বুঝবে
যতবার তোমার প্রেমে পড়েছি
ততোবার আমি মরেছি

অন্য কোন যুবকের সাথে না গিয়ে
সাদা শাড়িতে খালি পায়ে অন্ততঃ একদিন তুমি আমার সাথে হাটবে
তোমার আমার মুখোমুখি নির্ঘুম সব রাত সাক্ষী
পারমিতা তুমিও সেদিন মরবে ।

সাম্প্রতিক প্রেম

তুমি কি বাংলা সিনেমা দেখো ?
"তুমি আমার জনম জনমের সাথী"-একটু খ্যাঁত শুনালেও
সংলাপটা এখন আমার বেশ প্রিয় ।

তুমি বিশ্বাস করবেনা,
প্রথম যেদিন তোমায় দেখেছিলাম
মনেই হয় নি সেদিন তোমায় প্রথম দেখছি
তোমার পায়ের গোড়ালি হতে ঠোঁট, দেহের বাঁক
সবই যেন বহুকালের পরিচিত ।

বালিকা,
তোমায় আমি ও চোখে দেখতে পারিনি
এ আমার অপারগতা ।

কোঅর্ডিনেট জিওমেট্রি বুঝাতে গিয়ে বারবার আমি তোমার বৃত্তেই পৌছে যাই
আমাকে ক্ষেত্র ছাড়া করে দেয় তোমার বাকা ঠোঁট
নখের নীল রঙ , অবাধ্য এলোমেলো চুল ।

হাসিতে তুমি আমাকেও হার মানিয়েছো
চোখ দুটো ছোট করে
বাকা ঠোঁটে এতো মিস্টি হাসি তুমি কি করে হাসো
সে এক বিস্ময় । 

মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

আমার পারমিতা

পারমিতা,
তোমার প্রিয় আকাশ ছেড়ে বৃষ্টিরা ঝড়তে নারাজ স্বার্থপর পৃথিবীতে 
জীবনের প্রতিটি বর্ষা তাই বৃষ্টিহীন ।
যথোচিত প্রণয়ের রঙিন অদৃষ্টরা পরস্পর কালো অধ্যায়ের সাক্ষী 
অভিশাপকে শাস্তি মেনে নিয়ে  আমায়  প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে প্রতিদিন 

উপেক্ষণীয় তুচ্ছ ভালো না লাগার যে ভবিষ্যতের সাথে তুমি শুভদৃষ্টি ঘটালে
জেনে রেখো পারমিতা,
আমার আটপৌরে ভালোবাসারা সাক্ষী থাকবে
ধুমান্ধকার সে শুভদৃষ্টি তোমার চোখের পলক আটকাতে পারবে না 

রাতের আকাশে আলোর অস্পস্ট ছোপের মত
তোমার চোখেও ঝাপসা আধার নামবে
প্রায়শ্চিত্ত শেষ হলেই 
সে আধারে  নির্জলা উপবাসে আমরা শুভদৃষ্টি ঘটাবো 

নিষ্পত্র পোশাকে আবশ্যিক শয্যায় দুজনে জমাট বাধা থকথকে পেট্রোল হয়ে 
শুয়ে থাকবো অচৈতন্য নিদ্রারোগে 

গিরিপথের সঙ্কীর্ণ গলি ভেদ করবে আমার নিঃশ্বাস 
সুমের দেশীয় তিমির মতো ইট সুরকি মিশ্রিত পাকা বিছানায়
দুর্বোধ্য প্রেমপত্র পাঠ করবে তুমি ...

তারপর
সফেদ চাদরের দাম্পত্যবিহীন সম্পর্কগুলো বৈধতার খাম খুঁজে বেড়াবে
সুখের সন্ধানে ছুটাছুটি করে ক্লান্ত তুমি
আমার হটকারিতায় খানিকটা বিরক্ত হতে পারো
তবে তুমি খুশি হবে এই ভেবে যে আমি তোমায় খুন করিনি
গাদ্যিক গণিকাবৃত্তিতে রেখেছি তোমায় আজো জীবন্ত ।

ওরা বলবে
হ্যালুসিনেশনকে অভ্যাসে পরিণত করেছে তোমার অনুপস্থিতি
ওরা জানবেনা
তোমার উপস্থিতিগুলো চিরকালই ছিলো পাসওয়ার্ড বন্দী ।

রূপম-২৩/০৯/১৩ 

বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৩

শেষ দেখার পর আবার

শেষ দেখার পর আবার যেদিন তুমি অতিক্রম করবে আমায়
কসমেটিক সুন্দরীদের ভিড়ে তোমায় চিনে নেব ঠিক
মনে পড়ে যাবে সব কৈশোরে প্রেমের কথা
ঘামে ভেজা শার্ট থাকবে সাক্ষী
ক্লাস ফাকি দিয়ে প্রথম করেছিলাম দেখা

শহুরে দুরন্তপনা হয়ে ছুটে চলে যাবে রিক্সা
দেখে 
অবাক রোদে পাখিরা থাকবে ক্লান্ত
অনন্ত নিরবতায় দুই আঙুল
তোমাতে আর আমাতে
মাঝামাঝি দূরত্ব

অদম্য স্পৃহায় প্রাণমন আড়ষ্টিত রেখে
ঘন অন্ধকারে ততক্ষনে বিরক্ত 
চুপচাপ নগরী
স্বাভাবিক ভাবেই তাকিয়ে আমি জানতাম,
ক্ষানিকটা থেমেই তুমি শুরু করবে কাঁদা
তারপর আবার নিরবতায় ছেয়ে যাবে পুরো নগরী
তারপর আবার অপেক্ষা...

তোমার দেহের সুবাসে
ঘন ঘন নিঃশ্বাসে
ঢেউ উঠা ঠোটে সমুদ্রদের খেলা

মেঘের আকাল ছাড়িয়ে তোমার ভেজা আঁচল সাক্ষী
চারিদিকে ছিল শ্রাবণীয় স্তব্ধতা

কিছু স্মৃতি অবেলার
কিছু রাগ কতক কান্নার
নিঃশব্দে হবে মাটি
ব্যাক্ত হবে আমার মাঝে তোমার ফিরে আসবার কারণ
শ্মশান হবে চিন্তারাজি

ঝড় হবে জলের,বিস্ময়ের
আর বায়বীয় ধূলার
জল ছড়াবে
ভাঙ্গবে অভিমানের পাহাড় 
জনাকীর্ণ নিস্তব্ধতায় আলোকিত অন্ধকারে
হলে দেখা তোমার আমার

শেষ দেখার পর আবার

অভিমানকে করতে লালন,তোমার আমার সন্ধি বারণ

সোনামন,
বিশৃঙ্খলাময় বিকেলে হেটে গেছি বহুদূর 
হাতে রাখোনি হাত,বুকে রাখোনি মাথা
তবুও করেছো ধন্য ,
ছ'লাইনের এই অখাদ্যটি লিখলাম তোমায় নিয়ে
তোমার জন্য ...

কয়েকলাইন না হয় আরো দেব বাড়িয়ে
চশমাটা পড়ে চারপাশটা ভালো করে দেখো তাকিয়ে
শ্লোগানে শ্লোগানে কাতর দুশমন
ক্ষ্যাপা মোষের ষাঁড়
আছে রাস্তায় , আছে হাট দোকানে
আছে যার যার , তার তার ...

আর আমি মিটি মিটি হাসি
ভুল বানানে চিঠি লিখি
মনের কথা মেঘকে বলি
সোনামন ,
মেঘলা রাত্রি ভালোবাসি ।

তুমি আছো ব্যাপক আনন্দে
দাঁড়িয়ে আছো ব্যালকনিতে
কথা দিয়েও আসোনি
সংসদ দেখেও হাসোনি

বাড়িয়ে দিয়েছো যন্ত্রণা
আজ রাতে আর ঘুম হচ্ছে না ।

পাশ বালিশ হয়ে যদি পাশে পেতাম
সোনামন,
মিথ্যে বাহাদুরির গল্প বলতাম ।
অভিমানকে করতে লালন,
তোমার আমার সন্ধি বারণ ।।

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৩

সেই সংলাপ "ভালোবাসি"

সেই তুমি ছিলে কবে কার
কিছু স্বপ্ন ছিলো শঙ্কার
সব ভুলে আজ হাহাকার
ব্যর্থ হাসি প্রেমিকার ! 

সেই দিন
সেই রাস্তায় 
পথ ভুলে হাসিমুখে 
হেটে যাওয়া দুজনায়
অজানায় ... 

ছিলো রোদ্দুর, কিছু চুম্বন 
ঠোটে ক্লান্তি , চোখে ভাবনা 
কারো সব ভুল, হাতে কাশফুল 
আঙুলের গাঁথুনি বিদ্ধ আঙুল
ভুলে সব আজ হাহাকার 
উপহাস শুনি প্রেমিকার 

দিয়ে চিৎকার 
জানালায় 
কারো চোখে হারিয়ে খুঁজি শান্তি 
কারো বুকে রেখে মাথা
নিকোটিনে খুজি মুক্তি !

ইচ্ছে হলেই এনে দিতে পারো 
মুক্তো
সেদিনের সেই হাসি 
কান্না ঝড়া কন্ঠে 
সেই সংলাপ 
"ভালোবাসি"

রবিবার, ১৯ মে, ২০১৩

নষ্ট ভালোবাসায় নষ্ট কবিতা

আমি প্রেমে পড়ি না কোন রূপসীর শোভার
এতো শোভার আমার প্রয়োজন নাই
অতোটা ভালোবাসারও প্রয়োজন ছিলো না কখনো
একটা শরীর আর একটা মাংস মাধবীই আমার পছন্দ ।

আমি প্রেমে পড়ি না কেশবতী কোন নারীর কাজল কালো চোখের
প্রেমে পড়ি নগ্ন বাহুর , নীলিমার উন্নত বক্ষের
রক্তের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে , ধ্বংস দেখে আমি ক্লান্ত
সময় যাচ্ছে ফুরিয়ে ,এবার প্রয়োজন বীর্যের ।

প্রয়োজন নেই প্রেমিকার,কি হবে গিয়ে দামী রেস্তোরাতে
কফির সাথে মিশিয়ে খাওয়া লাল রং আর চুমুতে ?
মন আমার পড়ে আছে ক্ষুদা ও খরার এই অবেলায়
অনাহারে ভোগা মানুষের ব্যথাতে ।

নষ্ট আমি পথ ভ্রষ্ট আমি
ফিরিয়ে দিয়েছি নিষ্পাপ রূপসীর একুশটি লাল গোলাপ
মনে পড়ে এক বেশ্যার প্রেমে পাগল ছিলাম তখন
কত রাত কাটিয়ে দিয়েছি এমনি
করে হাজারটা পাপ।

নীলিমারা আজ ফিরে যাও ঘরে
মন এখন বিদ্রোহের মাঠে
বিশ্বাস রাখি
রাতের আধারে কলঙ্কিত হয়ে যাওয়া মেয়ের
ভোরের আলোয় মুখের হাসি ফিরে পাবার
বিপ্লবী অসম্ভবে ।। 

শুক্রবার, ১০ মে, ২০১৩

প্রিয় প্রেমিকা , পত্র দিও

প্রিয় প্রেমিকা,
গত আষাঢ়ে জীবনের বিশটা বছর পার হয়
তোমার মত আর কাউকে পাওয়া যায়নি বলে
বৃষ্টি হলে এখনও আমায় একাই ভিজতে হয় ।

প্রেমিকা জানো ,
বড় রাস্তার পাশে তোমার সেই প্রিয় অর্জুন গাছটা এখন আর নেই
সেখানে এখন বড় রেস্তোরাঁ , বিরিয়ানীর ঘ্রাণ
তোমার এই ভালোবাসার শহরে
আজ আমি বড্ড বেমানান ।

বড় আম গাছটার আড়ালে
যেখানে বসে জীবনের সেরা কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছিলাম
আজ সেখানে ইমারত তুলেছে মানিক মিয়া
ঝড় আর বৃষ্টিতে আগের মতো আর আশ্রয় খুঁজে পায় না
এদিকের সব শ্যামা আর টিয়া ।

প্রেমিকা,
তোমার প্রিয় শহরটাকে আমার হাতে ছেড়ে
তুমিতো বেশ আরামেই আছো শুনি
টেক্সাসের সেই শ্যানন স্ট্রীটের অভিজাত বাড়িতে ।

আমার খবর কি রাখো প্রেমিকা ?
আমি যে আজ হারিয়েছি পথ
কালো ধুয়া আর অন্ধ গলিতে । 

শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৩

মিস করিনা কাওকে

তোমায় শুনাবো বলে একটা কবিতা লিখেছিলাম
গগন ফাটা রৌদ্র তাপে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম
কাকগুলো অবিরত দেখছিলো আমায়
যেন কখনও কোন প্রেমিক দেখেনি,
যেন তীব্র তৃষ্ণায় তৃষিত কোন চাতক চোখে পড়েনি ...

আমি অপদার্থ ছিলাম তুমি সেটা জানতে
বহু বার কাছে পেয়েও তোমায় পারি নি কিছু বলতে
নজরুলের বাকরুদ্ধতা ভর করেছিলো আমাতে ।
লেনিনের শ্লোগান বধির করেছিলো আমায়
হিমুর সেই গৃহত্যাগী জোৎস্না
কেড়ে নিয়েছিলো চোখ আমার।

আমি ভীতু ছিলাম,
তোমায় পাওয়ার আনন্দের চেয়ে
তোমায় হারানোর দুঃখই আমায় ভাবিয়েছে বেশীবার ।

মিস করি তোমাকে,
একটু বেশি পহেলা বৈশাখ আর বইমেলাতে
বর্ষা কিংবা বসন্ত বরণে
চেতনাতে কিংবা রশিদ মামার টঙে...

খুব পছন্দের শিউলি ফুল গুলো যখন অযত্নে রাস্তায় পড়ে থাকে
খোঁপা হয়ে উঠে না কারো চুলে
মেঘের গর্জন যখন পাষান এ বুকে কাপুনি তুলে
বুঝতে পারি তখন তুমি নেই পাশে
খুব মিস করি তোমাকে ...

অনুভূতিগুলো যখন কবিতা হয়ে যায়



বৃষ্টি হচ্ছিল খুব
সকাল থেকেই সেদিন
রশীদ মামার টঙ চালের ফাঁকে
তামাক আর ফিল্টারের অন্তরঙ্গ সেই মুহূর্তে
বাশে হেলান দিয়ে দাড়িয়েছিলে
বৃষ্টি ছাড়ার অপেক্ষায়;
ভুল করে প্রথম যেদিন
দেখে ফেলি তোমায় ।

গাঢ় করে দেয়া কাজলে,শহুরে চোখে
নীল ঠোটে আর নীল জামা'তে
বেশ লেগেছিলো কিন্তু
নীল আমার প্রিয় রং ,
বন্ধুরা ক্ষেপায়,
সেই থেকেই নাকি শুরু ...

ভুল সুরে হেড়ে গলায় গাওয়া আমার সব গানে
অযত্নে আর অবহেলায় ফ্রেট উচু হয়ে যাওয়া
গীটারের ছয়টি তারে
হটাৎ একদিন খুঁজে পাওয়া হারানো পেন্সিলে
বন্ধুদের নিয়ে দেখা সব নীল ছবিতে
আধপোড়া ফিল্টারে কিংবা
রাজপথে দেয়া সব মিছিলে,অন্যমনস্ক মনে
তুমি মিশে ছিলে,তুমি মিশে ছিলে,তুমি মিশে ছিলে ।

তোমার ঠোঁটের ধোয়াটে মাদকতায়,
চোখ বুজে ধীরে
লেননের গানে
আমি ডুবে আছি,আমি ডুবে আছি ,আমি ডুবে আছি ।।  

অপদার্থ ছিলাম সব সময়,
কদাচিৎ ভীতুও
রঙিন কাগজে একেছিলাম তোমার চোখ ,
তোমার ঠোঁটও ।

চোখ গুলো আঁকতে গিয়ে নেশায় ডুবেছি শতবার
নিকোটিনের সাথে তোমার চোখ,তোমার ঠোঁট,
যেনো এলোমেলো সব বাসের প্রসব বেদনা;
তোমার আমার প্রণয়ের পৌনপুনিক গোলকধাঁধার
অমিমাংসিত জটিলতার।।

জটিলতার আজ সাত মাস ,
অপেক্ষা করেছি,
উপেক্ষা পেয়েছি।
বুঝতে পারিনি অ আর উ তে তোমার আমার
 এখনও বিস্তর ফারাক ।।

শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৩

প্রেমের গল্প অথবা একটি ছেলে মানুষই কবিতা

এটি একটি প্রেমের গল্প
দুস্টু মিস্টি প্রেমের গল্প
সাহসী মনের হটাৎ করে বোকা হবার গল্প
চতুর ছেলের প্রেমে পড়ে ধোঁকা খাওয়ার গল্প।।

স্থাপত্যকলার মেয়ে আর
প্রকৌশলের ছেলের গল্প,
টঙ দোকানে ধোঁয়া উঠা চা আর
আধপোড়া সিগারেটে
তর্ক জমানো গল্প।।

জোৎস্না রাতে দুজন মিলে আকাশছোয়া স্বপ্ন দেখার গল্প,
দূর পাহাড়ের কিনার ঘেঁষে ছোট্ট একটি ঘর বানাবার গল্প।
কালো ছেলের আর ফর্সা মেয়ের পালিয়ে যাবার গল্প,
পালাতে গিয়ে ঘরের টানে মেয়েটার আবার ফিরে আসার গল্প।।


দুঃখের গল্প , রাগের গল্প
একলা ঘরের কোণায় বসে বালিশ বুকে মেয়েটার
কেঁদে ফেলার গল্প ।

নিরবতার গল্প
ঘর ভাঙ্গার গল্প
দূরে যাবার গল্প ।

শেষ বিকেলের আলোতে
অভিমানে দিঘীর জলে
আজ ছেলেটার সারাদিন
তাকিয়ে থাকার গল্প ।।  

সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৩

নজরুল বলেছিলেন,ভন্ড আস্তিকের চেয়ে নাস্তিকই উত্তম । জাতীয় কবির মনে হয় জানা ছিলনা যে , নাস্তিকতার মধ্যেও ভণ্ডামি থাকতে পারে


একটা জিনিস পরিস্কার করার প্রয়োজন ...
ইসলামী সমমনা দলগুলোর নামে কাল(২২শে ফেব্রুয়ারি ২০১৩) যারা বিক্ষোভ করেছিলো তাদের একটা অংশের বিক্ষোভ ছিলো ধর্মকে কটুক্তিকারি ব্লগারদের বিরুদ্ধে । যার নেতৃত্তে ছিলো তাবলীগে জামায়াত ।  তারা মূলত এই আদর্শেই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলো ।


এখন  আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি,আন্দোলনকারীদের এই অংশের শতকরা ৯৮ ভাগই ব্লগ সম্বন্ধে কোন ধারণা রাখেন না । 

ব্লগাররা ধর্মকে কটুক্তি করে লেখালেখি করেন তারা শুধু এই অংশই জানেন । অথচ এই একজন ব্লগারের ধর্মবিদ্বেষী লেখার বিরুদ্ধে যে হাজার হাজার ব্লগার এর প্রতিবাদ করেন ঐ একই ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে সেই বিষয়ে তারা অবগত নন । অথবা নিজেদের স্বার্থেই হয়তো মাহমুদুর রহমানের মতো লোকেরা এই বিষয়টি তাদের জানান নি । 

দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, ইসলামী সমমনা দলগুলোর মধ্যে একটা বিরাট অংশ ছিল সুজোগ সন্ধানী জামাত শিবিরের,যারাই মূলত গণজাগরণ মঞ্চে ভাংচুর, জাতীয় পতাকা ছেড়া,শহীদ মিনার ভাঙ্গা,বোমাবাজি,গোলাবাজিতে লিপ্ত ছিলো । গতকাল রাত থেকেই এর দাত ভাঙ্গা জবাব দেয়া হচ্ছে ।

এখন কথা হচ্ছে, দেশের আজকের এই পরিস্থিতির জন্য কে কতটুকু দায়ী ।

আপনারা মানেন আর নাই মানেন,আমি মনে করি এই ঘটনার জন্য জামাত শিবির যতটুকু দায়ী, ঠিক ততটুকুই দায়ী সেই সব ধর্মকে কটুক্তিকারী ব্লগাররা।

শাহবাগ আন্দোলনের সাথে উনারা যুক্ত হয়েছেন খুবই ভালো কথা, কিন্তু ফ্রন্ট লাইনে এসে, মিডিয়ার সামনে বার বার এসে এক শ্রেনীর মানুষকে বুঝাতে বাধ্য করেছেন যে, শাহবাগের আন্দোলনকারীদের সবাই নাস্তিক ।ফলে  নিরীহ শাহবাগ আন্দোলনকারীদেরও নিয়ে অভিযোগ করার সুজোগ করে দিয়েছেন ।

নাস্তিক হওয়া আর ধর্ম কটুক্তিকারী হওয়া এক জিনিস না । জন্মসূত্রে  মুসলমান হলেও ডঃ আহমদ শরীফও একজন স্বঘোষিত নাস্তিক ছিলেন,তিনি কখনও মুহাম্মদ(সঃ) কিংবা অন্য কোন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কোন উল্টা পাল্টা লেখা লেখেন নি ।

নাস্তিকতা কিংবা আস্তিকতা দুটোই আপনার ব্যক্তিগত দর্শন । আপনি কি বিশ্বাস করবেন বা করবেন না  সেটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যপার।

 কিন্তু এর মানে এই নয় অন্যলোক যে জিনিস বিশ্বাস করে, আপনি সেটাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করবেন।গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারেন, পৃথিবীর সব বিষয়েই সমালোচনা হয় । কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে সীমা লঙ্গন করাটা কখনই উচিত নয় ।আপনি সেটা করতে পারেন না। 

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু ।
ছবি কৃতজ্ঞতায়ঃ পিয়েল ভাই